অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক : ফেনী জেলায় ভয়াবহ বন্যায় এ পর্যন্ত ১৭ জনের মৃত্যুর তথ্য পাওয়া গেছে। বন্যায় জেলার ছয়টি উপজেলায় শুধুমাত্র কৃষিতেই ক্ষতি হয়েছে ৪৫১ কোটি ২০ লাখ টাকার বেশি। এতে প্রায় দুই লক্ষাধিক কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন।
আজ বৃহস্পতিবার সকালে তথ্যগুলো নিশ্চিত করেছেন জেলা প্রশাসক মুছাম্মৎ শাহীনা আক্তার। তবে, একাধিক ব্যক্তির দাবি, এখনও তাদের স্বজন নিখোঁজ রয়েছেন।
মৃতদের মধ্যে ১০ জন পুরুষ, ৪ জন নারী ও ৩ জন শিশু রয়েছে। তাদের মধ্যে ১২ জনের পরিচয় মিলেছে। বাকী ৫ জনের পরিচয় পাওয়া যায়নি।
পুলিশের গোয়েন্দা শাখার বরাত দিয়ে জেলা প্রশাসন সূত্র জানায়, মৃত ওই ১৭ জনের মধ্যে ফেনী সদর উপজেলায় অজ্ঞাত ২ জন, ছাগলনাইয়া উপজেলার অজ্ঞাত এক মহিলার মৃত্যু হয়েছে। এছাড়া বন্যায় পরশুরাম উপজেলার ধনিকুন্ডা গ্রামের মৃত আমির হোসেনের ছেলে সাহাব উদ্দিন (৭০), একই উপজেলার মধুগ্রামের দেলোয়ার হোসেন (৫০), ফুলগাজী উপজেলার নোয়াপুর গ্রামের শাকিলা (২২), উত্তর করইয়া গ্রামের বেলালের ছেলে কিরণ (২০), দক্ষিণ শ্রীপুর গ্রামের মিজানুর রহমানের ছেলে রাজু (২০), কিসমত বাসুড়া গ্রামের বাসিন্দা আবুল খায়ের (৫০), লক্ষ্মীপুর গ্রামের সিরাজুল ইসলামের ছেলে সৈয়দ তারেক (৩২)।
এছাড়া শনিরহাট গ্রামের নুর ইসলামের মেয়ে রজবের নেছা (২৫), সোনাগাজী উপজেলায় মঙ্গলকান্দি ইউনিয়নের মাহবুল হকের ছেলে নাঈম উদ্দিন (২৮), ছড়াইতকান্দি গ্রামের শেখ ফরিদের ছেলে আবির (৩), দাগনভূঞা উপজেলার উত্তর করিমপুর গ্রামের নুর নবীর ছেলে নুর মোহাম্মদ মিরাজ (৮ মাস), জয়লস্কর গ্রামের হুমায়ুন কবিরের ছেলে জাফর ইসলাম (৭) মারা গেছেন।
এছাড়া অজ্ঞাতনামা অপর এক পুরুষ ও এক হিন্দু নারীর পরিচয় মেলেনি।
স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যায় জেলার ছয়টি উপজেলায় শুধুমাত্র কৃষিতেই ক্ষতি হয়েছে ৪৫১ কোটি ২০ লাখ টাকার বেশি। এতে প্রায় দুই লক্ষাধিক কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, বন্যায় জেলার ৩০ হাজার ৩৫২ হেক্টর ফসলি জমি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। যা মোট ফসলি জমির ৭৯ দশমিক ৬৯ শতাংশ। তারমধ্যে ১ হাজার ৮৬৫ হেক্টর আমন বীজতলা, ২৬ হাজার হেক্টর আমন, ১ হাজার ৮৫৪ হেক্টর আউশ, আবাদকৃত ৫২৫ হেক্টর শরৎকালীন সবজির পুরো অংশ, ৬৯ হেক্টর ফলবাগান, ৭ হেক্টর আদা, ১৬ হেক্টর হলুদ এবং ১৬ হেক্টর আখ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
উল্লেখ্য, অতি বৃষ্টি এবং ভারত হতে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে ফেনীতে গত দেড় মাসে তিনবার বন্যা হয়েছে। সর্বশেষ গত ১৯ আগস্ট আকস্মিক বন্যায় পরশুরাম, ফুলগাজীতে স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যার সৃষ্টি হয়। এ প্লাবন দ্রুত সমগ্র জেলায় ছড়িয়ে পড়ে।
Leave a Reply